এম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন, কক্সবাজার, ২৬ জানুয়ারী ॥
কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার বালুখালীর এলাকার ইয়াবা ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট কর্তৃক দিনমজুর আলমগীর ভুলু হত্যার ২৫দিন অতিবাহিত হলেও কোন কুলকিনারা হয়নি। থানা পুলিশও এঘটনায় মামলা না নেয়ায় হত্যাকারী বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। এমনকি নিহতের বাড়ি ভিটেও কেড়ে নিয়েছে হত্যাকারী চক্র। বর্তমানে এতিম পরিবারকে একদিকে অভিবাক হারিয়েছে, অপরদিকে মাথাগু জার ঠাইটুকুও হারিয়ে এখন এলাকা ছাড়া হয়েছে।
গত ১ জানুয়ারী উখিয়ার বালুখালী জুমেরছড়া গহিন অরণ্য থেকে ভুলুর মৃত দেহ উদ্ধার করে উখিয়া থানা পুলিশ। এঘটনায় প্রতিকার চেয়ে ২৬ জানুয়ারী পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে নিহতের পরিবার।
অভিযোগে জানা যায়, উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী এলাকার আকবর আহম্মদ নামের এক ব্যক্তির নের্তৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ি চক্র রয়েছে। চক্র প্রধান আকবরের নেতৃর্ত্বে অন্যান্য সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন লোকজনকে খাওয়াইয়া পেটে করে এলাকায় ও এলাকার বাহিরে পাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৫ নভেম্বর বালুখালী পশ্চিম পাড়ার মৃত শফিকুর রহমানের দিনমজুর ছেলে আলমগীর ভুলু (৩৮) কে প্রলোভনে ফেলে প্রতি প্যাকেটে ৪০টি করে ইয়াবার ৫০টি প্যাকেটে খাওয়াইয়া দেন।
অভিযোগে জানা যায়, উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী এলাকার আকবর আহম্মদ নামের এক ব্যক্তির নের্তৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ি চক্র রয়েছে। চক্র প্রধান আকবরের নেতৃর্ত্বে অন্যান্য সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা পাচারের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন লোকজনকে খাওয়াইয়া পেটে করে এলাকায় ও এলাকার বাহিরে পাচার করে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ৫ নভেম্বর বালুখালী পশ্চিম পাড়ার মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে আলমগীর ভুলু (৩৮) কে প্রলোভনে ফেলে প্রতি প্যাকেটে ৪০টি করে ইয়াবার ৫০টি প্যাকেটে খাওয়াইয়া দেন।
ভুলুর স্ত্রী রোজিনা আকতার জানান. আলমগীর ভুলুর পেটে করে অভিনব কৌশলে ইয়াবা চালান ঢাকা গিয়ে পায়ুপথ দিয়ে আর বের করতে পারেনি। ব্যথা অনুভব করে ঢাকা থেকে ফিরে আসে এলাকায়। উল্লেখিত ইয়াবা গুলো পেটে বহন করায় তা বের করা সম্ভব না হওয়ায় ইয়াবার মালিক আকবরের বরাবর শরনাপন্ন হই।
আকবর আহমদ ইয়াবা গুলো বের করে নিতে জোর চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হন। আমার স্বামী আরো অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্থানীয় ভাবে ডাঃ মোঃ শাহজাহানের কাছে চিকিৎসাও করান তিনি। কিন্তু এতেও কোন কাজ হয়নি।
শেষ পর্যন্ত ভিটা বাড়ী বিক্রি করে চিকিৎসকের নিকট নেয়ার কথাছিল। মরণযন্ত্রণায় এভাবে প্রায় সপ্তাহ সময় কেটে যায়। এবিষয়ে স্থানীয়ভাবে শালিস বিচারেও ইয়াবার মালিক আকবরের সাথে বসে কোন সুরাহা পায়নি।
তিনি আরো জানান, মৃত্যুর প্রহরগুনা স্বামীকে নিয়ে উখিয়া থানার ওসির কাছেও গিয়ে ছিলাম। তিনিও কোন ব্যবস্থা না নিয়ে পুরো ঘটনার রেকডিং সংক্রান্ত একটি মেমোরি কার্ড নিয়ে ফেলেন ওসি হাবিবুর রহমান। গত ১০ ডিসেম্বর আলমগীর ভুলুকে চিকিৎসার কথা বলে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায়। এর পর আর কোন খোঁজ পাওয়া পায়নি।
গত ১জানুয়ারী বালুখালী জুমের ছড়া নামক গহীন অরণ্য থেকে উখিয়া থানা পুলিশ বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে পেট কাটা অবস্থায় বিবস্ত্র মৃত দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে থানা পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে যথাযত কর্তৃপক্ষের সহযোগীতায় মৃত দেহ কক্সবাজার শহরে দাফন করা হয়।
নিহত ভুলুর স্ত্রী রোজিনা আরো বলেন, ইয়াবা ব্যবসায়িরা তার স্বামীর পেট কেটে ইয়াবাগুলো বের করার পর দেহটি জঙ্গলে ফেলে রাখে। বিষয়টি তদন্তকালে ঘটনাস্থল থেকে ভুলুর ব্যবহৃত কাপড় চোপড়, ভুলুর ছবি, বড় ছেলে আশিকুল হাসনাতের ছবি,একটি মোবাইল বুক ও একটি ৫০ টাকার নোট উদ্ধার করে।
এঘটনায় রোজিনা আকতার বাদী হয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ি সিনিাডকেট প্রধান আকবর আহমদ, আবদু রহিম, জিয়াবুল হক, কামাল উদ্দিন,ফখরুদ্দিন ও ডাঃ মোঃ শাহজাহানকে আসামী করে গত ২০ জানুয়ারী উখিয়া থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়। কিন্তু থানা পুলিশ রহস্যজনক কারণে এজাহারটি নথিভুক্ত করেনি।
নিহত ভুলুর স্ত্রী আরো জানান, থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় হত্যাকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য আমাকে বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগও হুমকি দিচ্ছে। এছাড়া আকবরগং আমার বাড়ী ভিটা কেড়ে নিয়ে আমি ও আমার দুই এতিম সন্তানকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। তাদের হুমকির কারণে এলাকা ছাড়া হয়ে বর্তমানে পথে পথে দিনযাপন করছি। এব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে তিনি ২৬ জানুয়ারী জেলা পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান।
এব্যাপারে বক্তব্য নেওয়ার জন্য উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) হাবিবুর রহমান এর সরকারী মোবাইল নাম্বারে একাধিক বার রিং করার পরেও তিনি রিসিভ করেননি।
পাঠকের মতামত: